রবিবার, ১ জানুয়ারি, ২০১৭

বাতজ্বর (RHEUMATIC FEVER)



             বাতজ্বর,আমাদের দেশে মুটামুটি পরিচিত রোগ।
সাধারনত স্ট্রেপ্টোকক্কাস বিশেষ প্রজাতি বা স্ট্রেপ্টকক্কাস হেমোলাইটিকাস এর সংক্রমনের জন্য ৫-১৫বছরের ছেলেমেয়েদের গলাব্যাথা হয়।যার ফলশ্রুতিতে বাতজ্বর হবার সম্ভাবনা থাকে।
            এ রোগের প্রধান লক্ষন যেমন,বড় বড় গিরা বা হাটু,পায়ের গিরা,হাতের কুনুই,কিংবা হাতের কব্জি ফুলে ব্যাথা হলে এবং তাঁর সাথে জ্বর থাকলে সাধারনত আমরা বাতজ্বর বুঝি।
           স্ট্রেপ্টকক্কাসের এন্টিজেন শরীরের বিভিন্ন কোষ কলা বিশেষ করে হৃদপিণ্ডের ভাল্বের গ্লাইকোপ্রটিনের সাথে বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়ার ফলে বাতজ্বরের সৃষ্টি হয়,এর সাথে সাথে হৃদপিণ্ডের ভাল্ব নস্ট হতে পারে।
           তাই কখনও এই রোগের লক্ষন প্রকাশ পেলে, দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেয়ে যাবতীয় পরীক্ষা নীরীক্ষার মাধ্যমে বাতজ্বরের ব্যপারে নিশ্চিত হতে হবে।
          পুস্টির অভাব,অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এ রোগ বেশি দেখা যায়।এ রোগ হবার নির্দিষ্ট কোন দিন বা মাস নেই,যে কোন ঋতুতেই এ রোগ হতে পারে।সাধারনত বর্ষা বা শিতকালে এ রোগের প্রকোপ দেখা দেয়।এ রোগ একটি পরিবারের ভিন্ন ভিন্ন সদস্যের হতে পারে আবার একা একজনেরও হতে পারে।

লক্ষনঃ
           #শরীরে জ্বর থাকে,এবং দীর্ঘ দিন যাবত জ্বর লেগেই থাকে।
           #গলার ভেতরের দিকে ব্যাথা হয়।ঢোক গিলতে অসুবিধা হয়।
           #হাত পায়ের আঙ্গুল বা অস্থিসন্ধিতে ব্যাথা হয়,আবার কখনও ফুলে যাতে পারে।
           #কখনও কখনও বুকের বাম পাশে বা বাম স্তনের নিচে চাপা ব্যাথা অনুভুত হতে পারে।
           #হাত বা পায়ের কোন একটা জয়েন্ট এর ব্যাথা ও ফোলা কমলেও আবার অন্যটি আক্রান্ত হতে               পারে।
          #শরীরে ব্যাথা থাকতে পারে।
          #রোগী শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করে।
          #জিহ্বা কালচে বর্ণের দেখায়।
          #শ্বাস-প্রশ্বাসে কস্ট হয় বা বুক ধড়ফর করে।

রোগ নির্ণয়ঃ
                 শুধুমাত্র লক্ষনের উপর ভিত্তি করেই বাতজ্বর রোগের উপস্থিতি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায় না।এর জন্য যথেস্ট পরীক্ষা-নীরীক্ষার প্রয়োজন আছে।এজন্য একজন ভালো বিশেষজ্ঞের তত্বাবধানে রোগীর চিকিৎসা করাতে হবে।
              মনে রাখবে,এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অল্পদিনে পুরোপুরি আরোগ্য হতে পারে না।এজন্য পূরন মেয়াদে ঔষধ সেবন করতে হয়।

বাতজ্বরের উপস্থিতির ব্যাপারে নিশ্চিত হবার পর,নিম্নের চিকিৎসা বা ব্যবস্থাপত্র অনুসরন করা যেতে পারে।

চিকিৎসাঃ
১।শরীরের জ্বর বা ব্যাথা কিংবা ফোলা কমানোর জন্য SALICYLET জাতীয় ঔষধ খাওয়া যায়।
যেমন___TAB_ecosprin-75/300mg,aspin-75mg
মাত্রা___প্রত্যহ ১+১+১করে বেশ কিছুদিন ধরে রাখতে হবে,তবে প্রয়োজন অনুযায় মাত্রা বাড়ানো বা কমানো যাবে। বয়সভেদে মাত্রা তারতম্য হবে।

২।এর সাথে PENICILLIN জাতীয় ঔষধ,
                     INJECTION__benzapen-12lac/6lac.

মাত্রা___চিকিৎসার শুরু থেকে প্রত্যহ ১বার ১০/১২ লাখ ইউনিট গভির মাংসপেশীতে ইনজেক্ট করতে হবে,প্রায় ১/২ সপ্তাহ।

৪।ইনজেকশন ব্যাবহার শেষ হলে, PENICILLIN জাতীয় ঔষধ
                                         TAB__oracyn-K-250mg,penvik-250mg  খেতে হয়।
মাত্রা___প্রত্যহ ১+০+১করে এক নাগাড়ে ৪/৫বছর ধরে রাখতে হবে,তবে ৪/৫ দিন করে মাঝে গ্যাপ দেওয়া অনুচিত হবে।

৫।বুকে ব্যাথা থাকলে স্টেরয়েড PREDNISOLUN জাতীয় ঔষধ খাওয়া যায়।
যেমন___TAB_deltason-5mg,deltapred-5mg.
মাত্রা___প্রত্যহ ১+০+১ করে  বেশ কিছুদিন ধরে রাখতে হবে।তবে ঔষধ একবারে ছেড়ে দেয়া ঠিক  হবে না।এরজন্য ক্রমে ক্রমে মাত্রা কমিয়ে বাদ দেওয়া যেতে পারে।

৬।পেটে গ্যাস থাকলে RANITIDINE জাতীয় ঔষধ ভালো কাজ করে।
যেমন___TAB_neotack-150,ranidin-150mg.
মাত্রা___প্রত্যহ ১+০+১করে আহারের ২০মিনিট আগে সেব্য।ব্যাথার ঔষধ চলাকালীন পর্যন্ত।

পথ্যঃ
         #পূর্ণ বিশ্রাম নিবে।
         #স্বাভাবিক পুস্টিকর খাবার খাবে।
         #ভারী কোন কাজ বা শরীরের চাপ সৃষ্টি করে এমন কোন কাজ হতে দূরে থাকবে।

মনে রাখবে,এ রোগের জন্য ঔষধ পূর্ণ মেয়াদে সেবন না করলে বারবার শরীর রোগাক্রান্ত হবে।
সুতরাং লক্ষন দেখা মাত্রই বাতজ্বর সম্পর্কে নিশ্চিত হবার জন্য,দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে যাবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ভিটামিন ই/VITAMIN E

প্রাথমিক ধারনাঃ ভিটামিন ই ট্যাবলেটে আছে সিনথেটিক ভিটামিন ই। এর সম্পূর্ণ কার্যকারিতা এখনও অজানা।তবে একথা প্রমানিত যে,ভিটামিন ই এন্টিঅক্সিড...